Published : 07 Sep 2025, 05:07 AM
‘নেয়ামত’ শব্দটি আমরা প্রায়ই ব্যবহার করি। সুস্বাদু খাবার, আর্থিক স্বচ্ছলতা, স্বাস্থ্য, সন্তান—এসবকে নেয়ামত বলা হয়। কিন্তু ইসলামের আলোকে নেয়ামতের অর্থ এর থেকেও বিস্তৃত। নেয়ামত শুধু ভোগ্যপণ্য নয়; বরং আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের ওপর অর্পিত প্রতিটি অনুগ্রহ, দয়া ও সুযোগই হলো নেয়ামত। নেয়ামত শব্দটি এসেছে আরবি “নি’মাহ” থেকে। এর অর্থ, কল্যাণ, দয়া, অনুগ্রহ, উপকারিতা। অর্থাৎ, নেয়ামত মানে এমন সব কিছু যা মানুষের জন্য কল্যাণকর এবং যা আল্লাহর দান ছাড়া সম্ভব নয়। আরও পড়ুন আল-আজিজ, যিনি ইজ্জত দান করেন ২০ জুন ২০২৫ কোরআনে বহু স্থানে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের নেয়ামতের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। ১. “আর তোমাদের ওপর আল্লাহর নেয়ামত পূর্ণ করে দিয়েছেন—বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ উভয়ভাবেই।
” (সুরা লুকমান, আয়াত: ২০) ২. “যদি তোমরা আল্লাহর নেয়ামত গুনতে থাকো, তবে তার হিসাব শেষ করতে পারবে না।” (সুরা ইবরাহিম, আয়াত: ৩৪) এ থেকে বোঝা যায়, নেয়ামতের সংখ্যা সীমাহীন, যা মানুষ কখনো পূর্ণরূপে গুনতে পারবে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “দুইটি নেয়ামত আছে, যার ব্যাপারে অনেক মানুষ ধোঁকায় থাকে—সুস্থতা ও অবসর সময়।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৪১২) এই হাদিসে আমাদের মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, স্বাস্থ্য ও সময় মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় নেয়ামত, অথচ আমরা এগুলোকে অবহেলা করি। ১. দুনিয়ার নেয়ামত: স্বাস্থ্য, ধন-সম্পদ, সন্তান, সুখী পরিবার, শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন ইত্যাদি। ২. আধ্যাত্মিক নেয়ামত: ইমান, ইবাদত করার তাওফিক, কোরআনের হেদায়েত, ভালো বন্ধু, দ্বীনের জ্ঞান। ৩. চূড়ান্ত নেয়ামত: আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং জান্নাত। এটি হলো নেয়ামতের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। আরও পড়ুন অবসরে ইবাদত মুমিনের নিয়ামত ১০ মার্চ ২০২৩ কোনো নেয়ামত পেলে একজন মুমিনকে দুটি বিষয় মনে রাখতে হয়— শুকরিয়া আদায় করা: আল্লাহর দানকে তাঁর ইবাদত ও কৃতজ্ঞতার মাধ্যমে স্বীকার করা।
সঠিক কাজে ব্যবহার করা: নেয়ামত অপব্যবহার করলে তা আযাবের কারণ হয়। যেমন, স্বাস্থ্য নষ্ট করা, সম্পদ অপচয় করা বা সময় নষ্ট করা। কোরআনে বলা হয়েছে, “যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর, তবে অবশ্যই আমি তোমাদের জন্য নেয়ামত বাড়িয়ে দেব।” (সুরা ইব্রাহিম, আয়াত: ৭) মোটকথা নেয়ামত মানে কেবল ভোগ-বিলাস নয়, বরং জীবনের প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাসই আল্লাহর দান। ঈমান, স্বাস্থ্য, সময়, পরিবার, শান্তি—এসবই নেয়ামত। একজন সত্যিকারের মুমিনের কর্তব্য হলো নেয়ামতকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা এবং সর্বদা আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করা। কেননা, কৃতজ্ঞ বান্দার জন্য আল্লাহ নেয়ামতের ভাণ্ডার আরও উন্মুক্ত করে দেন। আরও পড়ুন শিশু আল্লাহর দেওয়া শ্রেষ্ঠ নিয়ামত ২৪ মার্চ ২০১৬।
কাতারে হামলার পর ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়ন করছে কানাডা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী