Published : 06 Sep 2025, 09:05 AM
দেশের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক। এই মহাসড়কে সারা দেশের সব জেলার যানবাহন চলাচল করে। এছাড়াও লবণবাহী ট্রাকও চলাচল করে। রাস্তাটি অপেক্ষাকৃত সরু হওয়ায় প্রায়ই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে এবং মানুষ মারা যায়। আহতদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম শহরে নিতে হয়। অথচ লোহাগাড়া উপজেলায় একটি ট্রমা সেন্টার রয়েছে, যেখানে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব। হতাশাজনকভাবে, এক যুগ পেরিয়ে গেলেও এই ট্রমা সেন্টারটি চালু করা যায়নি। প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, লোহাগাড়া উপজেলায় ট্রমা সেন্টারটি নির্মাণে প্রায় চার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এটি ২০১৩ সালে উদ্বোধন করা হয়েছিল।
একটি অত্যাধুনিক ভবন অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে, আর বাইরে মৃত্যুর মিছিল বাড়ছে। সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের জন্য ‘গোল্ডেন আওয়ার’ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ, দুর্ঘটনার পর প্রথম এক ঘণ্টার মধ্যে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া গেলে অনেক জীবন বাঁচানো সম্ভব। কিন্তু এই মহাসড়কে দুর্ঘটনা ঘটলেই আহতদের জরুরি চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। এতে মূল্যবান সময় নষ্ট হয়, রক্তক্ষরণে অনেকের মৃত্যু হয়, এবং অনেকে চিরদিনের জন্য পঙ্গুত্ববরণ করেন। ২০০৭ সালে শুরু হওয়া এই ট্রমা সেন্টারের নির্মাণকাজ ২০১২ সালে শেষ হয়। এর জন্য ২৭টি পদও সুপারিশ করা হয়েছিল, কিন্তু কোনো জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়নি। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও বরাদ্দ করা হয়নি। অর্থাৎ, একটি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল তৈরির সমস্ত ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও, এটিকে সচল করার জন্য কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
জনগণের কষ্টার্জিত অর্থের এমন অপচয় সত্যিই হতাশাজনক। একটি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো তৈরি করা হলো, অথচ সাধারণ মানুষ এর সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তবে সম্প্রতি কিছুটা আশার আলো দেখা যাচ্ছে। স্বাস্থ্য উপদেষ্টার নির্দেশে অবশেষে ট্রমা সেন্টারটি চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একটি বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তিও হয়েছে। আশা করা যায়, দ্রুতই এটি চালু হবে এবং এই অঞ্চলের মানুষ এর সুফল পাবে। তবে এই দীর্ঘসূত্রিতার দায় কে নেবে? কেন ১২ বছর লেগে গেল একটি জরুরি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান চালু করতে? এই প্রশ্নগুলো আমাদের নীতিনির্ধারকদের কাছেই রইল। আমরা আশা করি, লোহাগাড়ার ট্রমা সেন্টারটি খুব দ্রুত পূর্ণাঙ্গ রূপে চালু হবে এবং অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে এমন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে সরকার আরও দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।।
কাতারে হামলার পর ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়ন করছে কানাডা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী