Published : 02 Sep 2025, 07:07 PM
তিনি ছিলেন বিখ্যাত মার্কিন রেস্তোরাঁ কোম্পানি অ্যাপলবিসের প্রেসিডেন্ট। কর্তৃপক্ষ তাঁকে শর্ত দিয়েছিলেন, কোম্পানিকে লাভজনক করতে পারলে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) করা হবে। তিনি সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে অ্যাপলবিসকে লাভের মুখ দেখান। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি তাদের কথা রাখেনি। ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি সেই প্রতিষ্ঠান ছেড়ে দেন। তবে, এক দশক পর তিনি আগের প্রতিষ্ঠানটি কিনে নেন এবং মধুর প্রতিশোধ নেন। আমরা বলছি যুক্তরাষ্ট্রের সফল কর্পোরেট ব্যক্তিত্ব জুলিয়া স্টুয়ার্টের কথা। গত এপ্রিলে সফল ব্যক্তিদের নিয়ে করা ম্যাথিউস মেন্টালিটি পডকাস্টে ৭০ বছর বয়সী এই নারী এই কথা বলেন। পডকাস্টে তিনি বলেন, ‘অ্যাপলবিসের চ্যালেঞ্জ নেওয়ার পর আমি নতুন দল গঠন করি, পরিকল্পনা সাজাই এবং দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করি। তিন বছরের মধ্যে অ্যাপলবিস ঘুরে দাঁড়ায় এবং শেয়ারের দাম দ্বিগুণ হয়ে যায়।’ এই অবস্থায় জুলিয়া একদিন আত্মবিশ্বাসের সাথে বোর্ডরুমে প্রবেশ করেন। তার হাতে ছিল গ্রাফ এবং সাফল্যের চার্ট।
তিনি ভেবেছিলেন, স্বপ্ন ছোঁয়ার সময় এসেছে। কিন্তু তার সামনে বসা চেয়ারম্যান সরাসরি বলে দিলেন, ‘না, কখনোই না।’ এই ‘না’তে জুলিয়া হতাশ হয়েছিলেন, কিন্তু ভেঙে পড়েননি। বরং এই ‘না’ তাঁকে নতুন মানুষে পরিণত করে এবং তিনি নতুন পথের নকশা আঁকেন। তিনি একটি নতুন প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন। গত শতকের নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে জুলিয়া প্রচণ্ড চাপের মধ্যে দিয়ে সময় পার করছিলেন। অ্যাপলবিস ছেড়ে তিনি যোগ দেন মানসম্মত খাবারের জন্য বিখ্যাত আরেকটি রেস্তোরাঁ ইন্টারন্যাশনাল হাউস অব প্যানকেকসে (আইএইচওপি)। প্রতিষ্ঠানটির অবস্থা তখন খুব খারাপ ছিল। পাঁচ বছরের মধ্যে জুলিয়া আইএইচওপিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যান। এরপর তার মাথায় নতুন বুদ্ধি আসে। জুলিয়া আইএইচওপি কর্তৃপক্ষকে বলেন, ‘আমাদের আরেকটি ব্র্যান্ড কিনতে হবে, না হলে ঝুঁকি থাকবে।’ অনেক চিন্তাভাবনার পর অ্যাপলবিস কেনার সিদ্ধান্ত হয়।
২০০০ সালে ২৩০ কোটি ডলারে আইএইচওপি অ্যাপলবিস কিনে নেয়। এটি শুধু ব্যবসায়িক সাফল্য ছিল না, বরং এক প্রকার মধুর প্রতিশোধও ছিল। চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার পর জুলিয়া অ্যাপলবিসের সেই পুরোনো চেয়ারম্যানকে ফোন করে শান্ত কণ্ঠে বলেন, ‘এখন আর দুজন নেতার প্রয়োজন নেই। আপনাকে ছেড়ে দিতে হচ্ছে।’ এই সাফল্যের জন্য জুলিয়াকে দুই দশক অপেক্ষা করতে হয়েছে। পরবর্তী সময়ে জুলিয়া আরেকটি রেস্তোরাঁ কোম্পানি ডাইন ব্র্যান্ডস গ্লোবালের চেয়ারম্যান এবং ডাইনইকুইটি ইনকরপোরেশনের সিইও হিসেবে এক দশক চাকরি করেন। বর্তমানে তিনি ফাস্ট ফুড চেইন বোজ্যাংগলস-সহ বিভিন্ন কোম্পানির বোর্ড সদস্য হিসেবে কাজ করছেন। তিনি নতুন প্রজন্মের উদ্যোক্তাদের জন্য বড় অনুপ্রেরণা। স্বাস্থ্য ও সুস্থতাবিষয়ক একটি অ্যাপেরও প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়া স্টুয়ার্ট।।
কাতারে হামলার পর ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়ন করছে কানাডা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী