Published : 12 Sep 2025, 01:06 PM
জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আখতার হোসেন আত্মগোপনে রয়েছেন। কিন্তু বিদ্যালয়ে না গিয়েও নিয়মিত হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দেওয়া এবং বেতন-ভাতা তোলার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। বিদ্যালয় ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন প্রভাব খাটিয়ে আখতার হোসেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেন। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে তিনি বিদ্যালয়ে যান না। এরপর থেকে বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক সুলতান মাহমুদ একাডেমিক কার্যক্রম সামলাচ্ছেন। ৫ সেপ্টেম্বর ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কক্ষ বন্ধ। অন্য শিক্ষকেরা একটি কক্ষে বসে থাকলেও আখতার হোসেন সম্পর্কে কিছু বলতে চাননি। স্থানীয় লোকজন বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় বিদ্যালয় ও এলাকায় তাঁর প্রভাব অনেক বেশি ছিল। এখনো তাঁকে ভয় পান সবাই। ফলে তিনি অনুপস্থিত থেকেও শিক্ষকদের সহযোগিতায় হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করছেন এবং নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলছেন।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, ৫ আগস্টের পর থেকে তারা আখতার হোসেনকে বিদ্যালয়ে আসতে দেখেনি। একজন প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য, আর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকও আসেন না। ফলে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং ফলাফলেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ বছর অনেক শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে। তারা দ্রুত নতুন প্রধান শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানায়।সহকারী শিক্ষক সুলতান মাহমুদ বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসের আগে আখতার হোসেন মাঝে মাঝে আসতেন। ফেব্রুয়ারির পর আর আসেননি। কীভাবে আখতার হোসেন হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেছেন, সেটা তিনি জানেন না। হাজিরা খাতা সভাপতি ও অফিস সহকারীর কাছে থাকে। আত্মগোপনে থাকায় চেষ্টা করেও আখতার হোসেনের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি তৈয়বুর রহমান বলেন, ‘আমি দুই মাস ধরে সভাপতির দায়িত্বে আছি।
এই সময়ে আখতার হোসেন নিয়মের মধ্যেই রয়েছেন। তিনি মেডিকেল ছুটিতে আছেন।’এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজাদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি গত ২৬ আগস্ট ওই বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। একাডেমিক সুপারভাইজার জানিয়েছেন, ২৫ আগস্ট পর্যন্ত তাঁর (আখতার হোসেন) হাজিরা রয়েছে। শুনেছি তিনি চিকিৎসার জন্য ছুটি নিয়েছেন। তবে এর কোনো কাগজ আমার কাছে নেই। অনেক দিন ধরেই তাঁকে উপজেলা শিক্ষা অফিসে আসতে দেখি না। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’।