Published : 03 Sep 2025, 08:07 AM
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) গত আগস্ট মাসে ১,২২,৫১৭ টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডল করেছে, যা এ পর্যন্ত একক মাসে সর্বোচ্চ। ৭৫,৫৮৭ বক্সের সমপরিমাণ এই কনটেইনার প্রবাহ টার্মিনালের গড় মাসিক প্রায় এক লাখ টিইইউস হ্যান্ডলিংয়ের চেয়ে অনেক বেশি। এই রেকর্ড হয়েছে চট্টগ্রাম ড্রাইডক লিমিটেডের (সিডিডিএল) ব্যবস্থাপনায়, গত জুলাইয়ের শুরুতে প্রতিষ্ঠানটি এনসিটির ২, ৩, ৪ ও ৫ নম্বর জেটির দায়িত্ব নেয়। গত মাসে এনসিটি তার ইতিহাসে সবচেয়ে কর্মব্যস্ত দিনগুলো পার করেছে। ২৮ আগস্ট এক দিনে সিডিডিএল ৫,০১৯ টিইইউস হ্যান্ডল করে, এই রেকর্ডও মাত্র তিন দিন পর ৫,০৬১ টিইইউস হ্যান্ডলিংয়ের মাধ্যমে ভেঙে যায়। বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সিডিডিএলের অভিজ্ঞ কর্মী ব্যবস্থাপনার কারণে জাহাজ টার্নঅ্যারাউন্ড টাইম (বন্দরে পৌঁছানো থেকে ছেড়ে যাওয়া পর্যন্ত মোট সময়), কনটেইনার ডেলিভারি, শুল্ক মূল্যায়ন ও গেট অপারেশনে দৃশ্যমান উন্নতি হয়েছে। এর ফলে বন্দরের কার্যক্রম আরও দ্রুত ও মসৃণভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে।
"এই সাফল্য দেশের বাণিজ্যকে আরও গতি দেবে এবং বাংলাদেশের বন্দর দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়টি বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেবে," বলেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক। তিনি আরও জানান, এই অর্জন সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতেও সহায়ক ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশের মোট আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ৯০ শতাংশের বেশি চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়, যা জাতীয় অর্থনীতির প্রাণভোমরা হিসেবেও বিবেচিত। ২০০৭ সালে চালু হওয়া পাঁচটি বার্থ বা জেটি বিশিষ্ট নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বন্দরের সবচেয়ে বড় কনটেইনার হ্যান্ডলিং অবকাঠামো। তবে দীর্ঘদিন ধরে জাহাজ জট, জাহাজ ভিড়তে বিলম্ব এবং কনটেইনার ডেলিভারির ধীরগতির সমস্যায় ভুগছিল দেশের প্রধান এই সমুদ্রবন্দর। ব্যবসায়ী ও আন্তর্জাতিক শিপিং লাইনগুলো এ নিয়ে বহুবার সমালোচনা করেছে। অনেক সময় জাহাজগুলোকে বহির্নোঙরে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হতো, এতে আমদানি ও রপ্তানিকারকদের খরচও বাড়ত।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ডেও চট্টগ্রাম বন্দরের এই দুরবস্থা প্রতিফলিত হয়েছে। লয়েডস লিস্টে চট্টগ্রাম বন্দর ধারাবাহিকভাবে নিচের সারিতেই থেকেছে, ২০২৪ সালের সূচকে নেমে যায় ৬৮তম স্থানে। এরপর সরকার দক্ষতা বাড়াতে এবং প্রতিযোগিতা পুনরুদ্ধারে বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনায় সংস্কার ও সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ওপর জোর দেয়। এই সংস্কারের অংশ হিসেবেই এনসিটির দায়িত্ব দেওয়া হয় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সিডিডিএলকে, যে প্রতিষ্ঠানের জাহাজ নির্মাণ ও ডকইয়ার্ড পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে। কর্তৃপক্ষ আশা করছে, নতুন ব্যবস্থাপনায় জাহাজের টার্নঅ্যারাউন্ড টাইম কমবে, কনটেইনার হ্যান্ডলিং বাড়বে এবং চট্টগ্রাম বন্দরকে আরও নির্ভরযোগ্য আঞ্চলিক বাণিজ্যের হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা যাবে।।
২২৭ কোটি টাকায় টোটালগ্যাস বাংলাদেশকে কিনে নিল ওমেরা পেট্রোলিয়াম